Find the Questions you Need

অলিখিত সংবিধান বলতে কি বুঝ? অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্টসমূহ আলোচনা কর?

১। সংবিধান কাকে বলে?

উত্তর : সংবিধান হলো রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক দলিল। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ কিভাবে গঠিত হবে, এদের গঠন ও ক্ষমতা কী হবে, জনগণ রাষ্ট্র প্রদত্ত কী কী অধিকার ভোগ করবে এবং জনগণ ও সরকারের সম্পর্ক কেমন হবে—এসব বিষয় সংবিধানে উল্লেখ থাকে। অর্থাৎ যেসব নিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়, তাকে সংবিধান বলে।

২। লিখিত সংবিধান কাকে বলে?

উত্তর : লিখিত সংবিধানের বেশির ভাগ বিষয় দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে। যেমন—বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লিখিত।

৩। অলিখিত সংবিধান বলতে কি বুঝ?

উত্তর : অলিখিত সংবিধানের বেশির ভাগ নিয়ম কোনো দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে না। এ ধরনের সংবিধান প্রথা ও রীতি-নীতিভিত্তিক, চিরাচরিত নিয়ম ও আচার-অনুষ্ঠানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। যেমন—ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত।

৪। সুপরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে বলে?

উত্তর : সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের কোনো নিয়ম সহজে পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায়। এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তন করতে কোনো জটিলতার প্রয়োজন হয় না। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আইনসভা এর যেকোনো অংশ সংশোধন করতে পারে। ব্রিটিশ সংবিধান সুপরিবর্তনীয় সংবিধান।

৫। দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে বলে?

উত্তর : দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের কোনো নিয়ম সহজে পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় না, এ ক্ষেত্রে সংবিধান পরিবর্তন বা সংশোধন করতে হলে জটিল পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এ ধরনের সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না। প্রয়োজন হয় বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সম্মেলন ও ভোটাভুটির। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয়।

৬। লিখিত সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর : লিখিত সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

i. লিখিত সংবিধানের বেশির ভাগ ধারা লিখিত থাকে বলে এটি জনগণের কাছে সুস্পষ্ট ও বোধমগ্য হয়। লিখিত সংবিধানে সাধারণত সংশোধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে বিধায় খুব সহজে পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় না। কিন্তু সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। লিখিত সংবিধান পরিবর্তিত সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। এ জন্য এটি কখনো কখনো প্রগতির অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। তা ছাড়া অনেক সময় সংবিধান সংশোধনের জন্য জনগণ বিপ্লব করতে বাধ্য হয়।

ii. লিখিত সংবিধান স্থিতিশীল বিধায় শাসক তাঁর ইচ্ছামতো এটি পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারেন না। তাই লিখিত সংবিধান যেকোনো পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল থাকতে পারে। লিখিত সংবিধানের সব ধারা জনগণ ও শাসক মেনে চলতে বাধ্য হয়।

৭। অলিখিত সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর?

উত্তর : অলিখিত সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

i. সমাজ সর্বদা প্রগতির দিকে ধাবিত হয়। আর অলিখিত সংবিধান সমাজের প্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সহজে পরিবর্তন করা যায়। অর্থাৎ এটি সমাজের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সহজেই খাপ খাওয়াতে পারে। তাই অলিখিত সংবিধান প্রগতির সহায়ক। কিন্তু অধিক পরিবর্তনশীলতা আবার অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির করতে পারে।

ii. অলিখিত সংবিধান যেহেতু সহজে পরিবর্তনীয়, তাই জরুরি প্রয়োজন মেটাতে অলিখিত সংবিধান অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অলিখিত সংবিধান ঘন ঘন পরিবর্তনের ফলে কোনো স্থায়ী নীতি ও কার্যক্রম হাতে নেওয়া যায় না। এর ফলে সরকারব্যবস্থা অস্থিতিশীল হতে পারে।

৮। উত্তম সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর : উত্তম সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

i. উত্তম সংবিধানে বেশির ভাগ বিষয় লিখিত থাকে। এ সংবিধানের ভাষা সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল হয়। এ কারণে উত্তম সংবিধান সবার কাছে সুস্পষ্ট ও বোধগম্য হয়।

ii. উত্তম সংবিধান সংক্ষিপ্ত হয়। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উত্তম সংবিধানে স্থান পায় না। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উল্লেখযোগ্য বিধি-বিধানগুলো এ সংবিধানে উল্লেখ থাকে।

৯। বাংলাদেশের সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর : বাংলাদেশের সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

i. বাংলাদেশের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয়। কারণ এর কোনো নিয়ম পরিবর্তন বা সংশোধন করতে জাতীয় সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতির প্রয়োজন হয়।

ii. বাংলাদেশের সংবিধানে সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার হাতে শাসনকার্য পরিচালনার ভার অর্পণ করা হয়। এই সরকার ব্যবস্থায় মন্ত্রিপরিষদ তার কাজের জন্য আইনসভার কাছে দায়ী থাকে।

No comments:

Post a Comment